পাবনা জেলা 🚀বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এর জেলা

পাবনা জেলা  |  বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য

পাবনা বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত এবং হার্ডিঞ্জ ব্রিজের জন্য বিখ্যাত একটি জেলা। উপজেলার সংখ্যানুসারে পাবনা একটি “এ” শ্রেণিভুক্ত জেলা। ১৮২৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ অক্টোবর স্বতন্ত্র জেলা হিসেবে পাবনা স্বীকৃতি লাভ করে। ১৭৯০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে এ জেলার বেশির ভাগ অংশ রাজশাহী জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। রাজশাহী জেলার ৫টি থানা ও যশোর জেলার ৩টি থানা নিয়ে সর্ব প্রথম পাবনা জেলা গঠিত হয়।
প্রত্নতাত্ত্বিক কানিংহাম অনুমান করেন যে, প্রাচীন রাজ্য পুন্ড্র বা পুন্ড্রবর্ধনের নাম থেকে পাবনা নামের উদ্ভব হয়েছে। কিছু ইতিহাসবিদের মতে, ‘পাবনা’ নামটি ‘পদুম্বা’ থেকে এসেছে। এছাড়াও গঙ্গার পাবনী নামের একটি নদীর মিলিত স্রোতধারার নামানুসারে ‘পাবনা’ নামের উৎপত্তি হয়েছে বলেও অনেকে মনে করেন।
পাবনা জেলা রাজশাহী বিভাগের দক্ষিণ-পূর্ব কোণ সৃষ্টি করেছে। এর উত্তর দিক ঘিরে আছে সিরাজগঞ্জ জেলা আর দক্ষিণে পদ্মা নদী একে রাজবাড়ী ও কুষ্টিয়া জেলা হতে পৃথক করেছে। এর পূর্ব প্রান্তদিয়ে যমুনা নদী বয়ে গেছে এবং পশ্চিমে নাটোর জেলা অবস্থিত। পাবনার আমিনপুর থানার দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে এসে পদ্মা ও যমুনা নদী পরস্পর মিলিত হয়েছে।
পাবনা জেলায় উপজেলা আছে ৯টি। এগুলো হলোঃ
আটঘরিয়া, ঈশ্বরদী, চাটমোহর, পাবনা সদর, ফরিদপুর, বেড়া, ভাঙ্গুড়া, সাঁথিয়া এবং সুজানগর উপজেলা। এছাড়াও এ জেলায় ১১টি থানা ও ১০টি পৌরসভা রয়েছে। এ জেলার নির্বাচনী আসন ৬৮ থেকে ৭২ পর্যন্ত। 
ঢাকার সাথে এ জেলার সরাসরি সড়কপথ, স্থলপথ, জলপথ ও বিমানপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। যদিও বিমানবন্দরটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। ঈশ্বরদী উপজেলায় উত্তর বাংলার গুরুত্বপূর্ণ একটি রেলওয়ে শাখা থাকার পাশাপাশি এই জেলায় দশটি রেলওয়ে স্টেশন আছে।
পাবনার শীল্পনগরীতে যথেষ্ট সংখ্যক ছোট বড় শীল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার মধ্যে স্কয়ার এবং ইউনিভার্সাল অন্যতম। এছাড়াও বাংলাদেশের বস্ত্র ও বয়নশিল্পে এ জেলার তাঁতশিল্পের বিশেষ অবদান রয়েছে।
পাবনা জেলার উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মধ্যে রয়েছে:
আল জামিয়া আল আশরাফিয়া
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
পাবনা মেডিকেল কলেজ
পাবনা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ
পাবনা জিলা স্কুল
পাবনা ক্যাডেট কলেজ ইত্যাদি।
এ জেলার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন:
আবদুল করিম খন্দকার- ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের উপ প্রধান সেনাপতি
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হাসিবুর রশীদ- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম উপাচার্য
অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ (এম.এন.এ)- সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী
আবদুল মমিন তালুকদার- সাবেক প্রতিমন্ত্রী
প্রমথ চৌধুরী -চলিত ভাষার জনক, কবি ও লেখক
সুচিত্রা সেন - বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী
সাইফুল আজম - অবসরপ্রাপ্ত বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা
অরুণ কুমার বসাক - বাংলাদেশের পদার্থ বিজ্ঞানে এক মাত্র প্রফেসর এমিরিটাস এবং একই সাথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ প্রফেসর এমিরিটাস। 
বাপ্পা মজুমদার - জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী।
পার্থ প্রতিম মজুমদার - বাংলাদেশের মূকাভিনয় শিল্পের পথিকৃৎ।
বন্দে আলী মিয়া - কবি, ঔপন্যাসিক, শিশু-সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও চিত্রকর।
স্যামসন এইচ চৌধুরী - শীর্ষস্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তা এবং স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান
চঞ্চল চৌধুরী – অভিনেতা
বৃন্দাবন দাস - নাট্যকার, অভিনেতা ও লেখক
রেদওয়ান রনি - চলচ্চিত্র পরিচালক
মির্জা আব্দুল জলিল- সাবেক প্রতিমন্ত্রী
মির্জা আব্দুল হালিম- সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
এডভোকেট শামসুল হক টুকু-  সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
মতিউর রহমান নিজামী - জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল ও আমীর ইত্যাদি। 
এ জেলার উল্লেখযোগ্য স্থানের মধ্যে রয়েছে:
রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র -যেটি পাবনার ঈশ্বরদীতে অবস্থিত এবং বাংলাদেশের প্রথম পারমানবিক বিদ্যূৎ কেন্দ্র। 
শতাধিক বছরের পুরাতন হার্ডিঞ্জ ব্রীজ 
লালন শাহ্ সেতু 
পাবনা মানসিক হাসপাতাল- যেটি বাংলাদেশের একমাত্র এবং সর্ববৃহৎ মানসিক হাসপাতাল
চলন বিল- বাংলাদেশের বৃহত্তম বিল এবং যেটি পাবনা জেলার একটি অংশে পড়েছে।
গাজনার বিল
বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্র
ঈশ্বরদী বিমানবন্দর
জোড় বাংলা মন্দির
শ্রী শ্রী অনুকৃল চন্দ্র ঠাকুরের আশ্রম
ঐতিহাসিক তাড়াশ জমিদার ভবন
ক্ষেতুপাড়া জমিদার বাড়ি
শিতলাই জমিদার বাড়ি
তের জমিদার বাড়ি
আজিম চৌধুরীর জমিদার বাড়ি
তাঁতীবন্দ জমিদার বাড়ি
চন্দ্রনাথ সেনের জমিদার বাড়ি
শাহী মসজিদ
নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলস
বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্র
বাংলাদেশ ডাল গবেষণা কেন্দ্র
ঈশ্বরদী ইপিজেড
পাকশী রেলওয়ে স্টেশন
পাকশী রিসোর্ট ইত্যাদি।
এ জেলা থেকে বিভিন্ন ধরনের দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয় যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: দৈনিক ইছামতি, দৈনিক স্বতঃকন্ঠ ইত্যাদি।
এ জেলা নিয়ে আপনার কোন মন্তব্য থাকলে জানান কমেন্টে আর বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন পাবনা জেলাকে।

Post a Comment

Previous Post Next Post