আমাদের ভিতর অনেকে উদ্যোক্তাই বেশিরভাগ সময় সেল নাই, সেল নাই 😭 সেল হলেও প্রফিট নাই বলে আফসোস করে।
আসলেও কি সেল নাই?
আসলেও কি প্রফিট নাই?
না কি আমরা সঠিকভাবে বিক্রি করতে জানি না। যদি আসলেই সেল না থেকে থাকে তাহলে তো কিছু করার নেই, কারণ সবই আল্লাহর হাতে। তবে যদি আপনি বিক্রি করছেন কিন্তু প্রফিট হয় না, এমন হয়ে থাকে তাহলে আজকের পোস্টটা আপনার জন্য।
বিশ্বের অন্যতম সব ব্র্যান্ডগুলো মূলত ৩টি ফর্মুলা তাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকে। আর এই ফর্মুলা ৩টি হচ্ছে:
CROSS SELLING:
বর্তমান কাস্টোমারের কাছে একটির বেশি প্রোডাক্ট বিক্রি করার নামই হচ্ছে ক্রস সেলিং। কেউ যখন আপনার থেকে একটা প্রোডাক্ট কিনবে, তখন আপনার প্রোডাক্টের সাথে সম্পর্কিত অন্য কোনো প্রোডাক্ট তার কাছে সেল করার চেষ্টা করুন। যেমন: যদি আপনি ক্যামেরা সেল করেন, সেক্ষেত্রে আপনি ক্যামেরার সাথে ক্যামেরার ব্যাগ বিক্রি করতে পারেন। যদি আপনি মোবাইল বিক্রি করেন, তার সাথে চার্জার, হেডফোন ইত্যাদি বিক্রি করার চেষ্টা করুন। মূল কথা হচ্ছে আপনার মূল প্রোডাক্টের সাথে কম দামি কিন্তু প্রফিটেবল এমন কিছু প্রোডাক্ট সেল করার চেষ্টা করুন।
[ম্যাকডোনাল্ড ক্রস সেলিং করে যখন আপনি একটি খাবার অর্ডার দেন, তখন তারা সঙ্গে সঙ্গে বলে:
"Would you like fries with that?"
এভাবে তারা প্রধান আইটেমের সঙ্গে সস্তা কিন্তু লাভজনক আইটেম যোগ করে দেয়।
ফলাফল: কাস্টোমার খুশি, বিক্রি বাড়ে, প্রফিট দ্বিগুণ।]
UP SELLING:
আপনার বর্তমান কাস্টোমার যে প্রোডাক্ট কিনতে এসেছে, তার চেয়ে দামি প্রোডাক্ট তার কাছে বিক্রি করার নামই আপসেলিং। আপনার থেকে কেউ একজন রেগুলার প্রোডাক্ট কিনছে, এখন তার কাছে আপনি আরেকটু দামি প্রোডাক্ট বিক্রি করার চেষ্টা করুন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে কাস্টোমারকে কনভিন্স করার পদ্ধতি জানতে হবে। ধরুন কেউ একজন এসেছে আপনার কাছে একটা ২৮ ইঞ্চি টিভি কিনতে, যার মূল্য ৩৮ হাজার টাকা, তবে আপনার কাছে একই ব্র্যান্ডের ৩৬ ইঞ্চি টিভি রয়েছে যার মূল্য ৪৫ হাজার টাকা। এখন তাকে আপনি বুঝান যে, “স্যার, আপনি যেহেতু ২৮ ইঞ্চি টিভি কিনছেন, এর মানে হয়তো আপনি টিভি থেকে ভালো একটা এক্সপেরিয়েন্স পেতে চান। তবে আপনি যদি আর ৭ হাজার টাকা অ্যাড করেন, তাহলে আপনি ৩৬ ইঞ্চি একটা টিভি পাচ্ছেন যেটা আপনাকে ভালো এক্সপেরিয়েন্স দেবে।”
[একটি চমৎকার আপসেলিং উদাহরণ হলো Apple।
যখন আপনি একটি iPhone কিনতে যান, Apple আপনাকে শুধু বেসিক মডেল নয়, বরং বলে:
“128GB নয়, আপনি 256GB মডেল নিন—আরও বেশি স্টোরেজ পাবেন!”
এখানে কাস্টোমার আরামদায়ক অভিজ্ঞতার জন্য বেশি টাকা দিয়ে আপগ্রেড করে—আর Apple বাড়তি প্রফিট করে।
👉 এটি ক্লাসিক আপসেলিং: একই প্রোডাক্টের উন্নত ভার্সন অফার করে কাস্টোমারকে বাড়তি মূল্য দিতে রাজি করানো।]
DOWN SELLING:
কাস্টোমারের কাছে ন্যূনতম একটা প্রোডাক্ট বিক্রি করার নামই ডাউনসেলিং। ধরুন একজন মানুষ রোজ আপনার দোকানে আসে কিন্তু কোনো প্রোডাক্ট কিনছে না, সেক্ষেত্রে আপনি চেষ্টা করুন তার কাছে একদম ন্যূনতম মূল্যের কোনো প্রোডাক্ট বিক্রি করার অথবা তাকে আসল প্রোডাক্টই কম মূল্যে দিন। এখানে আমাদের কাজ হচ্ছে যেকোনো কিছু সেল করার মাধ্যমে সবার আগে আমাদের অডিয়েন্সকে কাস্টোমারে রূপান্তর করা।
[👉 এই ফর্মুলাটা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে KFC। খেয়াল করে দেখবেন তারা মাঝে মাঝে একটা অফার দেয় যে: কুরকুরের খালি প্যাকেট নিয়ে আসতে পারলে তারা ফ্রিতে KFC’র চিকেন ফ্রাই দেবে। এখানে কি তাদের লস হয় না? আমি মনে করি না। কারণ মানুষ যখন ফ্রিতে একবার KFC’র চিকেন খায়, তখন সে এটা থেকে পাওয়া এক্সপেরিয়েন্স সহজে ভোলে না, এবং যার ফলে তার আবারও খেতে মন চায়। পরবর্তীতে সে এটি টাকা খরচ করে কিনে খায়।]
✅ আসুন এই ৩টা ফর্মুলা কীভাবে ব্যবহার করবেন তার একটা গাইডলাইন দিয়ে দেই:
🌟 Down Selling: যারা আপনার প্রোডাক্ট অ্যাড টু কার্ট বা চেকআউট করেছে কিন্তু কিনে নাই, তাদেরকে অফার দিন, ডিসকাউন্ট দিন। মূল কথা তাকে আপনার কাস্টোমার বানান যেন সে দ্বিতীয়বার ডিসকাউন্ট ছাড়াই আপনার থেকে পণ্য কিনে। (কিন্তু এক্ষেত্রে আপনার পণ্যের কোয়ালিটি অনেক ভালো হতে হবে)।
🌟 Cross Selling: কাস্টোমার যখন আপনার পণ্য হাতে পেয়ে একটা ভালো এক্সপেরিয়েন্স পাবে, তখন সে মাঝে মধ্যে আপনার কাছ থেকে কেনাকাটা করবে। তখন তার কাছে অন্য কী কী প্রোডাক্ট বিক্রি করা যায়, সেদিকে মনোযোগ দিন।
🌟 Up Selling: যখন একটা কাস্টোমার আপনার লয়াল কাস্টোমারে পরিণত হয়ে যাবে, তখন তাকে আপনি আরেকটু দামি প্রোডাক্ট বিক্রি করার চেষ্টা করুন যেন তারও লাভ হয় আর আপনারও লাভ হয়।
🙏 যদি আপনি এই ফর্মুলা তিনটি ভালোভাবে বুঝে থাকেন, তাহলে আমার অনুরোধ—আপনার ব্যবসায় এই ফর্মুলা তিনটি কাজে লাগান। 🙏
সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ 🥰
Post a Comment