সংগ্রাম আপনাকে শক্তিশালী করে তােলে

সংগ্রাম আপনাকে শক্তিশালী করে তােলে আমি এই কথাটি মন থেকে বিশ্বাস করি। আমার বাবা আমার সব আবদার পরিশ্রম করিয়ে মেটাবার চেষ্টা করতেন। আমি যা। চাইতাম তাই এনে দিতেন না।


সংগ্রাম আপনাকে শক্তিশালী করে তােলে


বরং আমাকে কোনাে-না কোনােভাবে উনি পরিশ্রম করিয়ে নিতেন। একবার আবদার করলাম পুরাে ক্রিকেট সেট লাগবে। যথারীতি আমার। কাছে এলাে এসএসসিতে ভালাে ফলাফল করার চ্যালেঞ্জ। ওই সময় মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল।

মনে মনে ভাবলাম আমার ভাগ্যটাই খারাপ। যা-ই হােক পরীক্ষার আগের চার মাস অনেক পরিশ্রম করে যখন পাস করলাম তখন আমার বাবা আমার হাতে ৫০০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললেন ‘নে! যা কিনতে মন চায় কিনে নিয়ে আয়! সেদিন আমি কিছুই কিনতে পারিনি।

কারণ পরিশ্রমের টাকা খরচ করতে কষ্ট হচ্ছিল। হিসাব কষতে বসে গেলাম এবং যথারীতি কোনাে হিসাবই মিলল না। তার কিছুদিন পর আমার বাবা হঠাৎ করে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আকাশ ভেঙে পড়ল আমাদের মাথার ওপর।

শুরু হলাে আসল সংগ্রাম, জীবন এবং জীবিকার জন্য। আমি মনে মনে বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে বললাম ‘ধন্যবাদ বাবা আমাকে সংগ্রামের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য।

আমরা যা চাই সেটা যদি পেয়ে যাই কোনাে রকম পরিশ্রম, কষ্ট বা সংগ্রাম ছাড়াই তাহলে সেই জিনিসটির মূল্য অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি

এবং ধীরে ধীরে আমাদের ভেতর থেকে দুর্বল করে দেয়। তখন হঠাৎ করে যখন কঠিন সময় চলে আসে তখন আমরা ভেঙে পড়ি। আমার এক ছােট ভাই সারাজীবন যা চেয়েছে তাই পেয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষের দিকে যখন ইন্টার্নশিপের প্রয়ােজন এসে পড়ল, তখন ওর বাবাকে গিয়ে বলল তােমার কোনাে বন্ধুকে একটু বলে দাও না যেন আমাকে একটা ইন্টার্নশিপের সুযােগ করে দেয়।

বাবার অনুরােধে একটি প্রতিষ্ঠানেও কাজের সুযােগ পেল এবং চার মাস কাজ করে ইন্টার্নশিপ রিপােট। জমা দিয়ে গ্র্যাজুয়েটও হয়ে গেল। তারপর তার দিন চলে যাচ্ছিল জীবনের নিয়মে।

হঠাৎ তার বাবার আকস্মিক মৃত্যুতে পুরাে পরিবারের ওপর নেমে এলাে 

কঠিন সময়। বাবার বন্ধুদেরও আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। কঠিন সময়ের কঠিন আঘাত সইতে

পেরে ভেঙে পড়েছিল। কারণ সে শিখতে পারেনি জীবনের কঠিন সময় কীভাবে মােকাবিলা করতে হয়। লড়াই ছাড়া কিংবা নিজেকে চ্যালেঞ্জা না করে এই পৃথিবীতে। কেউ বড় হতে পারেনি। তাই আমি বিশ্বাস করি জীবন মানেই সংগ্রাম করা, নিজেকে। চ্যালেঞ্জ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া।




যেখানে সংগ্রাম নেই, সেখানে অগ্রগতি নেই।


জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে স্ট্রাগল। কাজ পেতে স্ট্রাগল, কাজটিতে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে স্ট্রাগল। ব্যবসা শুরু করতে স্ট্রাগল আবার ব্যবসার জন্য দল গঠন। করাতেও স্ট্রাগল। সব সময় সংগ্রাম।

একজন সফল মানুষকে বন্ধু বানাতেও স্ট্রাগলের প্রয়ােজন এবং সারা জীবন বন্ধুত্ব টিকিয়ে রাখাতেও স্ট্রাগল। কোথায়। নেই স্ট্রাগল? কিন্তু আমরা সবকিছুই সহজে পেতে চাই, তাই আমরা শর্টকাট (সহজপথ) খুঁজবার চেষ্টা করি। কিন্তু আমরা ভুলে যাই সঠিক পরিকল্পনা কঠিন।

পথকেও সহজ করে দিতে পারে। ধরুন আপনার এখন একটি কাজ লাগবে কারণ আপনি আপনার পছন্দমতাে জীবনযাপন করতে চান এবং সেক্ষেত্রে একটি কাজ আপনাকে সেই সক্ষমতা প্রদান করবে। এখন এটি হচ্ছে আপনার সংগ্রামময়।

জীবন শুরুর বীজ বপণ কারণ আপনি কোনাে একটি জিনিস অর্জন করবার জন্য মনস্থির করে ফেলেছেন। আমি কিন্তু এখানে ‘অর্জন’ শব্দটি ব্যবহার করেছি। অর্জন মানেই হলাে তার সাথে সংগ্রাম আছে।

এখন যা-ই আপনি অর্জন করতে চাই না কেন, তার জন্য প্রয়ােজন সঠিক পরিকল্পনা।

ধরুন আপনি এই মুহূর্তে কঠিন স্ট্রাগলের মাধ্যমে পরিশ্রম করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনাে একটি ইন্সটিটিউট থেকে পাস করে বের হয়েছেন এবং আপনার কাছে সিজিপিএ ছাড়া উল্লেখ করার মতাে আর কিছুই নেই।

এখন আপনার করণীয় কী হবে? 







Post a Comment

Previous Post Next Post