(টোন)

     

                          

বেশ!
একটি শব্দের সাথে বাংলাদেশের মানুষ অতি পরিচিত, এই শব্দটি অতীতেও বেঁচে ছিল, বর্তমানে বেঁচে আছে, আমার দীর্ঘ বিশ্বাস ভবিষ্যতেও বেঁচে থাকবে।
শব্দটি হলো
টোন 'এই শব্দটির সাথে আরেকটু জুড়ে দিলেই,
শব্দটি পরিপূর্ণতা পাবে তা হলো টিটকারি।
জীবনে চলার পথে, আপনি অনেকবার এই টোন শুনেছেন এবং ভবিষ্যতেও আরো শুনবেন আমার একান্ত বিশ্বাস।
এখন কথা হল মানুষ টোন কেটে কি পায়?
অস্কার, নোবেল নাকি বাইবেল!
টোন দেওয়াটা কি আসলেই দরকার??
প্রথমেই বলে রাখি, টোন কারা কাটে এদের মধ্যে বিশেষ ক্যাটাগরি বিদ্যমান।
এক ধরনের মানুষ যারা অদ্ভুত অদ্ভুত  জিনিস দেখে তারা টোন কেটে বসে, অন্যদিকে যেসব পাবলিক আপনাকে দেখে জ্বলছে, তারাও টোন কেটে বসে।
আবার এক ধরনের মানুষ হল যারা মূর্খ আর বাকি থাকলো এমন এক ব্যক্তিগণ যারা শুধুমাত্র অন্যকে ছোট করে এই টোন  কাটার মাধ্যমে নিজেরা একটু আনন্দ খুজে নেয়, সেসব পিছিয়ে পরা মানুষগুলোকে। পরিশেষে, আরেক ধরনের কথা না বললে কি জানো অপূর্ণতা থেকে যাবে, সেই রকম কিছু টোনবাজ খুজে  পাওয়া যাবে যারা অভ্যাস এর বসে  টোন কেটে বসে। মানে হলো সে টোন  কেটে কেটে অভ্যস্ত।
সে রাস্তায় মেয়ে দেখলেও টোন কাটে   আবার অন্য কারো মাকে দেখলেও টোন  কেটে বসে। রাস্তায় কোন স্টাইলিস্ট ছেলে দেখলেও তার টোন কাটতে  ইচ্ছে করে।

আবার কোন মেয়ে শারীরিক দিক দিয়ে একটু মোটা বা চিকনা তাকেও টোন কাটে।
বেশিরভাগ টোনবাজ মানুষ গুলো টোন  করে, নিজেকে আনন্দ দেওয়ার জন্য, অন্যকে ছোট করার জন্য লাঞ্ছিত করার জন্য।
কি বুঝতে পারছেন হয়তো টোন কাটার আক্ষরিক কিছু কারণ??
আচ্ছা,
মনে করেন আপনি একজন মেয়ে, সামাজিক রীতিনীতি অনুসারে বিয়ে করেছেন নতুন সাম্রাজ্য নিয়ে শ্বশুর বাড়ি গিয়েছেন। সেখানে আপনি নির্দ্বিধায় বিনাবাধায়  টোন শুনবেন, হতে পারে পাশের বাসার চাচীমা কাটছে আবার দেখা যাবে কোন এক দুঃসম্পর্কের মামীও টোন কেটে বসে আছে। আসলে টোন কাটবেই, টোন আপনাকে শুনতেই হব,  এর গ্যারান্টি ওয়ারেন্টি কেউ দেবে না, শুনতেই হব। 

আপনি একটা এলাকায় নতুন কিছু করছেন। মানে হলো সকল পুরাতন জিনিস এর মধ্যে আপনি নতুন কিছু নিয়ে কাজ করছেন ।তখন দেখবেন, পুরাতন মানুষগুলোর টোন কাটবে।  কারন তারা জ্বলছে, জ্বলুক না তারা। আপনি আপনার লক্ষ্য  ঠিক রেখে হেঁটে চলুন আপনার স্বপ্নের কিনারায়।
আবার ধরেন আপনি একজন সুপাত্র, বিয়ে করতে গিয়েছেন। আপনার রূপ, আপনার উচ্চতা, আপনার লুক, চুলের স্টাইল এসব দেখেও টোন করতে পারে।
বেশিরভাগ সময় যখন কাউকে টোন কাটা হয়, তখন মানে যাকে নিয়ে টোন কাটা হয়, সে রেগে যায় সে ব্যাপারটাকে সিরিয়াসলি নিয়ে নেয়। সিরিয়াসলি নিয়ে সে তার মনের আক্রোশটা কখনো বডিল্যাঙ্গুয়েজ, কখনো গালাগালির মাধ্যমে, আবার কখনো তর্কবিতর্কের মাধ্যমে প্রকাশ করে। হাস্যকর
হলেও সত্যি যে টোন এখন ডিজিটাল হয়ে গেছে।
কি রকম??
কেউ কাউকে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে টিটকারি দেয়
আবার কেউ ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে।
সব কিছুরই একই অর্থ সেটা হল টোন।
এখন আপনাকে কেউ যদি কোন  কারনে টিটকারী করে, সেটা রিয়েল লাইফে হোক বা ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে হোক, আপনি রেগে যাবেন না।
হ্যাঁ, রেগে যাওয়াটা স্বাভাবিক। রাগ একটি ভাইরাস জাতীয় সফটওয়্যার। যেটি আমাদের মস্তিষ্কে আপডেট হলে শরীর ও অন্যান্য সকল সফটওয়্যারের কার্যকরী কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। আবার কেউ নিজের ভেতর পুষে রাখে, পুষে রেখে কি করে রাগ মেটানোর জন্য এগিয়ে যায়। এই রাগকে আমি কাল সাপের  সাথে তুলনা করতেই পারি  কিন্তু কাল সাপের চেয়েও কম বিষধর নয় রাগ। তাই সব সময় মাথায় রাখবেন আপনাকে যে টোন কাটছে সে মূর্খ। সে আপনাকে টোন কাটছে সে পিছিয়ে পড়া মানুষ। সে একজন নিন্দুক। সে আপনাকে দেখে টোন কাটছে, সে আপনাকে দেখে জ্বলছে। আপনাকে তার কম্পিটিটর ভাবছে। কিন্তু  আপনার কম্পিটিশন আপনার সাথে। তাই আপনাকে কে টোন  কাটল না কাটলো সেদিকে মনোযোগ একদম দিবেন না আপনি আপনার সময়টাকে ব্যস্ততার মধ্যে কাটাতে থাকুন। কখনো এসব নিন্দুক,  মূর্খদের কারনে  রেগে যাবেন না। এদেরকে একটা জীবনু মনে করেন, আর মাথায় রাখবেন একজন মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা 70 হাজার কোটি সমান।
লেখক ঃ জামিল হোসেন রিফাত

Post a Comment

Previous Post Next Post